সুমন মাহমুদ শেখ জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা। প্রায় ২মাস যাবত নেত্রকোনার কেন্দুয়া সরকারি কলেজের ৫২ জন শিক্ষক, ৮ জন অফিস স্টাফ ও ১৮ জন মাস্টার রুলের কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধ থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন যাপন করছেন। তাছাড়া সামনে রমজান ও ঈদের বাড়তি খরচের কথা ভেবে অনেকে প্রায় দিশেহারা। এতে ব্যহত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রম। বিরূপ প্রভাব পড়ছে প্রায় ৬হাজার শিক্ষার্থীর উপর। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে শিক্ষক ও কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর কলেজের অধ্যক্ষের পদটি শূন্য হয় এবং সাময়িকভাবে রুটিন মাফিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ আব্দুল মালেক। উক্ত পদের জন্যে জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে ৭জনের নামও প্রস্তাবনায় রয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক এর স্থায়ী সমাধান সম্ভব হয়নি। ফলে প্রভাষক মোহাম্মদ আব্দুল মালেকের রুটিন মাফিক দায়িত্ব পালন ছাড়া তেমন কিছু করার নেই। এমতাবস্থায় তিনি বলেন, আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে শূন্য পদটি পূরণ করা হোক। এক্ষেত্রে ডিজি মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। এছাড়াও কথা হয় অফিস সহায়ক মো. সাইফুল ইসলাম, ইসলামের ইতিহাসের প্রভাষক স্বপন কুমার বণিক, ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মো. শওকত আলী, শরীর চর্চার শিক্ষক মো. আব্দুল হাই, সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক পলাশ রঞ্জন কর, অর্থনীতির প্রভাষক মোহাম্মদ মোতাসিম বিল্লাহ ও মোহাম্মদ মাহফুজুল হক ভূইঞাসহ অনেকের সাথে। প্রধান অফিস সহকারী এনামুল হক বলেন, একজন আয়ন ব্যয়ন কর্মকর্তা না থাকায় আমাদের বেতন ভাতাদি বন্ধ। এমতাবস্থায় আমরা খুব সমস্যায় আছি যা যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা চাই শূন্য পদে খুব দ্রুত অধ্যক্ষ নিয়োগ করে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমকে স্বাভাবিক ও গতিশীল করা হোক। ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মো. আনিছুর রহমান আক্ষেপ করে বলেন, আমরা খুবই দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি। গত মাসে প্রায় ১লাখ টাকা ঋণ করেছি। বাচ্চারা কিছু চাইলে দিতে পারি না। সামনে আসছে রোজা ও ঈদ। কীভাবে চলবো একমাত্র আল্লাহই জানেন । ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান আহম্মদ আব্দুল্লাহ হারুন বলেন, শিক্ষকতা হচ্ছে একটি মহান পেশা। মাস শেষে বেতনের টাকা দিয়ে বাচ্চাদের পড়াশোনা ও সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এর মধ্যে আবার বেতন বন্ধ। স্বাভাবিক জীবন যাপনে আমাদের সবার ছন্দ পতন ঘটছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের ফর্ম ফিলাপ ও ভর্তির টাকা ডিডি কেটে ব্যাংকে জমা দিতে হয় এবং প্রয়োজনে টাকা উত্তোলনও করতে হয়। কিন্তু এর কিছুই করা যাচ্ছে না। তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে শূন্য পদটি পূরণের জোর দাবি জানাই । এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ফোনে (অফিস) যোগাযোগ করলে জানান, এটা মন্ত্রণালয়ের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আশা করি, ওখান থেকেই খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।