বেবি চক্রবর্ত্তী:- বাংলা সাহিত্য হল সমাজের দর্পণ। সৃজনশীলতায় ভাবনায় বিশিষ্ট সাহিত্যিক এবং সমাজসেবী মানব মুখোপাধ্যায় – অজয় ভট্টাচার্য প্রমুখদের অভাবনীয় কর্মকান্ডে বিগত বছরের ন্যায় এ বছরও তিন দিন আগস্টের ৯ থেকে ১১ পর্যন্ত শান্তিপুর পাবলিক লাইব্রেরী হলের নির্মলেন্দু লাহিড়ী মঞ্চে নদীয়া সাহিত্য ও সংস্কৃতি উৎসবের আয়োজন করেছিল। জেনারেশন এ্যচিভার পরিবার। এই উৎসবের প্রথম দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পদ্মশ্রী রতন কাহার, বর্ষীয়ান সাংবাদিক সাহিত্যিক ধনঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় এই উৎসবের সভাপতিত্ব করেন প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার তুষার কান্তি মুখোপাধ্যায়। বিভিন্ন জেলা থেকে বর্ষিয়ান কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, বাচিক শিল্পীরা এবং সেই সঙ্গে নবাগত শিল্পীরাও উপস্থিত ছিলেন। ইন্ডিয়ান আইডল জি বাংলা খ্যাত সংগীতশিল্পী নির্মাল্য ভট্টাচার্য, বাউলশ্রী উপাধি প্রাপ্ত লোকসংগীত শিল্পী সত্য রঞ্জন মন্ডল, এসিস্ট্যান্ট লেবার কমিশনার প্রতীক মুখার্জি, বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক রাজিব শ্রাবণ, অর্জুন কুমার ঘোষ, সুনীল চক্রবর্তী সহ আরও প্রায় পঞ্চাশের বেশি সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় স্তরে প্রায় ২০০ শিল্পী কবিতা পাঠ,আবৃত্তি, নৃত্য, শ্রুতি নাটক কবিতা-কোলাজ এবং হারমোনিকা বাদনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। নৈবেদ্য হারমোনিকা একাডেমী তাদের যৌথ পরিবেশনা উপস্থাপনা করেন। দ্বিতীয় দিনে ৩০৬ জন বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিকদের লেখায় সমৃদ্ধ পরিবেশ মূলক যৌথ সংকলন ‘প্রজন্ম’এই মঞ্চে প্রকাশিত হয়। সম্পাদনা করেন প্রতিষ্ঠানের দুই কান্ডারী সম্মানীয় উত্তম প্রামানিক এবং সম্মানীয় সুমিতা পয়ড়্যা। মোড়ক উম্মোচনে উপস্থিত ছিলেন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিভিন্ন স্তরের সম্মানীয় কবি সাহিত্যিক ও পরিবেশ কর্মী গণ। কৃষ্ণনগর থেকে সাইকেল চালিয়ে সুপরিচিত পরিবেশ কর্মী সাইকেলবিদরা শান্তিপুর আসেন। ঐদিন ২০০ এর অধিক কবি সাহিত্যিক বিভিন্ন জেলা এবং রাজ্যের বাইরে থেকে তাদের লেখনী নিয়ে উপস্থিত হয়ে মঞ্চ আলোকিত করেন। বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পীরা তাদের সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শ্রোতাদের আনন্দ দান করেন। কৃষ্ণনগর থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত কিশোরকন্ঠী গায়ক তরুণ সরকার ও অলোক দাস । শান্তিপুরের প্রায় ২৫ টি নৃত্য সংস্থা এই উৎসব মঞ্চে উপস্থিত হয়ে নৃত্য পরিবেশন করেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন চিত্রশিল্পী, মৃৎশিল্পী, ক্রীড়াবিদ, সমাজসেবী শিক্ষক, ডাক্তার, বিভিন্ন পাক্ষিক পত্রিকার সম্পাদকগণ। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষিকা ডঃ সাধন কুমার হালদার, ডঃ রমলা মুখার্জী, ডঃ সমীর শীল, লানন গবেষক প্রবীণ সাংবাদিক বরুণ চক্রবর্তী,ডঃ সুজন কুমার বালা, অভিনেতা সাহিত্যিক প্রদীপ মিশ্র, অভিনেতা মডেল অজয় ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন। মনোমুগ্ধকর এসরাজ বাঁধন পরিবেশন করেন নবীন শিল্পী রঘুনাথ ভাস্কর। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত শিল্পী, কবি, সাহিত্যিকদের জেনারেশন অ্যাচিভার ‘আইকন’ অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিত করা হয়। জেনারেশন অ্যাচিভারের সাহিত্য শাখা আন্তর্জাতিক সাহিত্য দিশারীর প্রাণপুরুষ সম্মানীয় হিমেন্দু দাস , সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ঢালী সহ-সম্পাদক ডক্টর মুস্তাক আহমেদ সহ সভাপতি ডঃ দীপ্তি রায় এবং বিভিন্ন গুনীজনেরা উপস্থিত ছিলেন। আন্তর্জাতিক মহা মঞ্চের প্রাণ প্রতিমা রূপা শিকদার উপস্থিত ছিলেন। সেই সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সুযোগ্য কর্মযোদ্ধারা যেমন অনিল চন্দ্র সিকদার, চুমকি মুখার্জি, মানসী দে চ্যাটার্জি, রত্না চক্রবর্তী, মুরারি নন্দী, শ্রাবণী পাল, সৌমেন কর, সুমিতা প্রামাণিক, তন্দা ভট্টাচার্য, অংকনা মুখার্জি, সায়ন্তনী পাল, রায়া ভট্টাচার্য, আশা লতা দেবী, অশ্রুকণা দাস ,দীপ্তি মুখার্জি, রমেন ভদ্র, বরুণ সমাদ্দার, ঝন্টু রায়, উজ্জ্বল কুমার পতি, বিশ্বনাথ মুখার্জি প্রমূখ যারা না থাকলে এই অনুষ্ঠানটি সম্পূর্ণ হতো না। উল্লেখ্য যে ৯ ও১০ই আগস্ট শান্তিপুরে নদীয়া সাহিত্য সংস্কৃতি উৎসবের পাশাপাশি নন্দনে অবনীন্দ্র সভাগৃহে ১২ ই আগস্ট কলকাতা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এবং অন্তিম দিন ছিল ১৪ই আগস্ট। স্থানীয় বিভিন্ন আবৃত্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সংগীত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং নৃত্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তাদের দলগত পরিবেশনার মাধ্যমে সন্ধ্যার অনুষ্ঠানটিকে সাফল্যমন্ডিত করে তোলে। কমিটিতে যারা ছিলেন তাদের নিরলস পরিশ্রম এই উৎসবকে সাফল্যমন্ডিত করেছে। প্রতিদিন সকাল সাড়ে দশটা থেকে রাত্রি ১১ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলেছিল। এবং এই উৎসব মঞ্চে প্রায় আট শতাধিক মানুষকে বিভিন্ন বিভাগে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মানিত করা হয়। চার দিনের এই সাহিত্য সাংস্কৃতিক উৎসবকে সফলভাবে সঞ্চালনা করে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন যারা তারা হলেন একযোগে সম্মানীযয় মৃন্ময় বাগ, সম্মানীয় সুপ্রিয়া ঘোষ, বিথীকা দালাল , প্রতিম সেন ও শিউলি সরকার। আগামীদিনে সৃজনশীল কাজের দিকে তাকিয়ে শ্রদ্ধানুরাগীদের ভাবনা।